পটুয়াখালী প্রতিনিধি ॥মৌসুমি বায়ুর প্রবল প্রভাব ও অমাবস্যার জো-এর ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে পটুয়াখালীর নদ-নদীর পানি। অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি ও অবিরাম বৃষ্টির পানিতে থৈ থৈ করছে পটুয়াখালী শহর ও নি¤œাঞ্চলসহ উপকূলের জনপদ। টানা কয়েক দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টির পানিতে গোটা জেলার নি¤œাঞ্চল যেমন পানিতে ভাসছে, তেমনি গত দুই দিন ধরে অস্বাভাবিকভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নি¤œাঞ্চলের মানুষগুলো চরম বিপাকে পড়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে জোয়ারের পানি আরও বৃদ্ধি পেয়ে পটুয়াখালীর উপকূলীয় কলাপাড়া, রাঙ্গাবালী, গলাচিপা, দশমিনা, বাউফল, মির্জাগঞ্জ, দুমকী উপজেলার অন্তত অর্ধশত চর প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারের পানি থেকে বাদ যায়নি পটুয়াখালী জেলা শহরও। স্বাভাবিকের তুলনায় ২ থেকে ৩ ফুট জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে ওই সব চরের মানুষের বাড়িঘর ও ফসলি জমি। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন চরাঞ্চলবাসী। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে অবিরাম বৃষ্টিতে ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানির তোড়ে পটুয়াখালীর জেলা শহর রক্ষা বাঁধের স্লুইস দিয়ে পানি প্রবেশ করে তলিয়ে গেছে জেলা শহরের পৌর নিউমার্কেট চত্বরের গোটা বাজার এলাকা। এছাড়াও লঞ্চঘাট সড়ক, মহিলা কলেজ রোড, জুবিলী স্কুল রোড, স্বনির্ভর রোড, কাঠপট্টি এলাকা, হাসপাতাল চত্বরসহ শহরের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। পটুয়াখালী জেলা পৌর নিউমার্কেট ক্লিনিক ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান, কাপড় ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম, রণজিত পাল, ওষুধ ব্যবসায়ী মিহির কুমারসহ একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ক্ষতি সাধন হয় কোটি টাকার মালামাল। অপরদিকে জোয়ারের পানিতে ফেরির গ্যাংওয়ে তলিয়ে যাওয়ায় লেবুখালী, বগা, মির্জাগঞ্জ, গলাচিপার ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল ৪-৫ ঘণ্টা। এ সময় ওই সব ফেরিঘাটের দুইপাড়ে শত-শত যানবাহন আটকা ছিল দীর্ঘ সময়। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হন নদী পারাপারের জন্য অপেক্ষায় থাকা মানুষ।
অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। সাগরের টেউয়ে টিকতে না পেরে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরারত জেলেরা ইতোমধ্যে ট্রলার নিয়ে উপকূলে ফিরে এসেছেন। এ ব্যাপারে কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনছার উদ্দিন মোল্লা জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগর উত্তাল থাকায় জেলেরা উপকূলে ফিরে এসেছে। মঙ্গলবার ও বুধবার কিছু ট্রলার সাগরের উদ্দেশে রওনা হলেও তারা কিছুদূর গিয়ে আবার তীরে ফিরে এসেছেন।
Leave a Reply